কাঁচা শাক-সবজি দীর্ঘ সময় সংরক্ষনের উপায়

কাঁচা শাক-সবজি দীর্ঘ সময় সংরক্ষনের উপায়-মসলা সংরক্ষণ করার উপায়

আমরা বাঙালি আমরা সব পারি। এই কথাটা কি আমরা বাস্তবতায় রূপ দিতে গিয়ে আমাদের জীবনের অনেক মূল্যবান সম্পদ হারিয়ে ফেলেছি। তারপরও আমরা আমাদের গর্ব কে ধরে রাখি। আমরা বাঙালি আমরা সব পারি। তবে আমরা সবকিছু পারলেও আমাদের সময় হয় না নিজেদের জন্য টাটকা এবং সতেজ খাবারগুলো বাসাক সবজিগুলো নিজের জন্য কিনে বাসায় রাখার মত। আমরা সারাদিনে বাসায় ব্যস্ততার থাকিবা অফিসে ব্যস্ত থাকি। সপ্তাহখানেক শেষে আমরা একদিন একটি লম্বা লিস্ট নিয়েই বাজার করে নিয়ে আসি। আমরা সারা সপ্তাহের কাঁচা শাকসবজি গুলো এক দিনেই কিনে এনে সেগুলো দিয়ে সারা সপ্তাহ কেটে দেই। আমরা এক সপ্তাহের শাকসবজি একদিন এই নেওয়ার কারণে শাক সবজি গুলো সতেজ এবং টাটকা খেতে পারি না তবে আজকে আমরা আপনাদের সামনে আলোচনা করব কিভাবে আপনি শাকসবজি গুলো সতেজ এবং টাটকা রাখবেন।

আপনি যদি কাঁচা শাকসবজি গুলো সতেজ এবং টাকা রাখতে চান তাহলে অবশ্যই আপনি আমাদের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন এবং আমাদের টিপসগুলো অনুসরণ করুন তাহলেই আপনি আপনার বাসার কাঁচা শাকসবজি গুলো। খুব সহজেই সংরক্ষণ করতে পারবেন এবং সারা সপ্তাহ জুড়ে টাটকা এবং সত্যের শাকসবজি গুলো খেতে পারবেন। আমাদের আর্টিকেলটি পড়লে আপনি অবশ্যই জানতে পারবেন কিভাবে আপনাকে কাঁচা শাকসবজি টাটকা এবং সতেজ রাখতে হয় সে সম্পর্কে আমরা নিজের সম্পূর্ণ তথ্য উল্লেখ করলাম এবং তুলে ধরলাম। তাহলে চলুন সময় নষ্ট না করে আমাদের আর্টিকেলটি শুরু করা যাক এবং আপনারাও আমাদের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে দেখুন।

ফল ও সবজি সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা

কাঁচা শাকসবজি নিয়ে বাঙালির ঝামেলা অন্ত নেই। একটু বেশি শাকসবজি কিনলে সেটা যদি আমরা খেতে না পারি তাহলে কিছুদিনের মধ্যেই তা পঁচে যাবে। এবং একবারই যদি আমরা অধিক শাক সবজি কিনে নিয়ে না আসি তাহলে বাজারে শাক সবজির দাম বেড়ে যাবে, এছাড়াও পছন্দের শাকসবজি গুলো হয়তো বা সারা সপ্তাহ নাও থাকতে পারে বাজারে শাকসবজির সংকটে পড়তে পারে এজন্য আমরা একদিন এই এক সপ্তাহের শাকসবজি গুলো কিনে নিয়ে আসি বাসায়। তবে আমরা সারা সপ্তাহের জন্য শাকসবজি গুলো কিনে নিয়ে আসলেও সেটা কিভাবে সংরক্ষণ করতে হবে তা নিয়ে চিন্তিত।

>

এছাড়াও আমাদের মাঝে অনেকেই রয়েছেন যারা নিজেদের বারান্দায় ব্যালকনিতে কাঁচা শাকসবজি চাষ করে থাকেন এবং ফলন ভালো হলে তা আমরা সংরক্ষণ করতে চাই। তাদের জন্য কাঁচা শাকসবজি সংরক্ষণ করা একটি চ্যালেঞ্জিং বিষয়ে বলেই বলা যায়। এই সমস্যাগুলো সমাধান করতেই আমরা আপনাদের সামনে সুন্দর দিকগুলো তুলে ধরব যাতে আপনি সহজেই আপনার বাসার শাকসবজি গুলো সুন্দর ভাবে সংরক্ষন করতে পারেন। যাতে আপনি সংরক্ষণ করা শাকসবজি গুলো কয়েকদিন ধরে খেতে পারেন এবং তা যেন পচে না যায় সতেজ থাকে।

সবজি সংরক্ষণ এর সঠিক উপায়

আলু পেয়াজ রসুন এগুলো সাধারণত বাজার থেকেই আমরা পরিমাণ একটু বেশি কিনে ফেলি। এ ধরনের শাকসবজি গুলো আমাদের একটু বেশি যত্ন নেওয়ার লাগে যাতে এই সবজিগুলো বেশিদিন থাকে এবং আমরা তার অধিক দিন খেতে পারি। এ ধরনের শাক সবজির যত্ন নেওয়ার জন্য আমরা আপনাদের সামনে যে কথাটি বলবো সেটি হলো, আপনার কিনে আনা আলু পিয়াজ রসুন গুলোর মধ্যে যেসব আলু পিয়াজ রসুন পচে গেছে বা পচে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে সেগুলো আপনি আলাদা করে রাখুন এবং ভালো গুলোকে আলাদা করে ফেলুন।

ভালো সবজি; ভালো সবজিগুলো আপনি বেতের ঝুড়িতে রেখে খাটের নিচে বা আপনার কিচেনে রাখতে পারেন সুন্দরভাবে গুছিয়ে। তবে আপনাকে মনে রাখতে হবে যে একেক জন একেক ঝুড়িতে রাখতে হবে। এবং আপনাকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যে যে সবজিটি পচে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে সেইসব জুটিকে অবশ্যই আলাদা করে রাখতে হবে। এছাড়াও আপনি যদি পেঁয়াজ অথবা রসুন সংরক্ষণ করতে চান। তাহলে আমরা বলবো পেঁয়াজ ও রসুন গুলো আপনি সুন্দরভাবে ধরিয়ে দিলে ব্লেন্ডার করে সেটি ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ করতে পারেন।

শাক সংরক্ষণ করার সঠিক উপায়

আমরা বাঙালি আমরা মাছ মাংস ডিম খেতে পছন্দ করলেও শাক সবারই প্রিয়। আপনি যদি শাক খেতে ভালোবাসেন তাহলে আপনি অবশ্যই আপনার বাসার জন্য অধিক পরিমাণে শাক কিনে আনেন, কারণ সব সময় সব শাক সবজি বাজারে পাওয়া যায় না বলেই আপনি নিজের বাসার জন্য অধিক পরিমাণে শাকসবজি নিয়ে আসেন কিন্তু এইসা গুলো কিভাবে সংরক্ষণ করবেন তা নিয়ে একটি চিন্তা হয় বটে। তবে আপনি যদি শাক সংরক্ষণ করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে মনে রাখতে হবে যে কিন্তু বেশি দিন সংরক্ষণ করা সম্ভব নয়। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই শাকগুলো পচন ধরে যাবে। তবে সুন্দরভাবে এবং যত্নসহকারে শাকগুলো রাখলে অবশ্যই কিছুদিন সংরক্ষণ করা যাবে এবং টাটকা এবং সতেজ থাকবে।

আপনার কিনে আনা সাগুলো যদি আপনি সংরক্ষণ করতে চান তাহলে আপনাকে বাজার থেকে কিনে এনে শাক গুলো সুন্দর ভাবে বেঁচে একটি পলিথিনে কিংবা নিউজপেপারে কাগজে মুড়িয়ে ফ্রিজের নরমালে রাখতে পারেন। এই অবস্থায় রাখলে আপনার ফ্রিজে কিছু দিনের মতো ভালো থাকবে। এই পদ্ধতিতে আপনি যেসব কাজগুলো সংরক্ষণ করতে পারবেন তাদের নামগুলো আমরা নিচে উল্লেখ করলাম। লেটুস পাতা, ধনে পাতা, পুদিনা পাতা, কারি পাতা এই ধরনের শাখ গুলো আপনি নরমল ফ্রিজে সংরক্ষণ করতে পারবেন। এছাড়াও আপনি যদি এক কিংবা দুই দিনের জন্য এ ধরনের শাকসবজি গুলো সংরক্ষন করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে বাতাস চলাচল এবং শীতাতপ তো ভাব এরকম স্থানে রাখতে হবে তাহলে আপনি দুই থেকে তিন দিনের মতো সতেজ এবং টাটকা রাখতে পারবেন।

কাঁচা মরিচ সংরক্ষণ এর সঠিক উপায়

আপনি কি আপনার বাসায় খাওয়ার জন্য কাঁচামরিচ রেখেছেন। সেই কাঁচামরিচ গুলো আপনি সংরক্ষণ করতে পারছেন না তাহলে আমরা আপনাদের সামনে আমাদের এই ট্রিকসটি তুলে ধরব যাতে আপনি খুব সহজেই আপনার বাসার মরিচগুলো সংরক্ষণ করতে পারবেন। অনেকেই আমাদের সামনে বলেছেন যে কাঁচা মরিচ ফ্রিজে রাখলে নষ্ট হয়ে যায়, তাদেরকে আমরা বলব আপনি যদি সঠিক নিয়মে আপনার কাঁচামরিচ গুলো ফ্রিজে রাখেন তাহলে নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। আপনার কিনে আনা কাঁচামরিচ গুলো ভোটার ফেলে বাতাসে বা রোদে শুকাতে দিন, এরপরে প্লাস্টিকের ঝুড়ি তে বা ফ্রিজের নরমালে রাখুন। এভাবেই আপনি আপনার কাঁচামরিচ গুলো ফ্রিজের নরমালে 14 দিন থেকে তিন সপ্তাহ পর্যন্ত সঠিকভাবে এবং সুন্দরভাবে সংরক্ষণ করতে পারেন। আশা করি আমাদের ট্রিক্সটি ফলো করলে আপনি উপকৃত হবেন।

শীতকালীন সবজি দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করার উপায়

সাধারণত গ্রামে শীতকালীন শাকসবজির বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। আমরা যারা গ্রামে বসবাস করি তারা হয়তো বা শাকসবজি প্রতিনিয়ত টাটকাগুলি পেয়ে থাকি। এর পরেও আমরা যারা শহরে বসবাস করি তাদের সব সময় টাটকা শাকসবজি গুলো পাওয়া হয়না তাই আমরা যখন পছন্দের শাকসবজি গুলো পাই তার আমরা একদিন এই সকল শাকসবজি কিনে নিয়ে আসি যাতে আমরা এই শাক সবজি গুলো অনেকদিন খেতে পারি। শীতকালীন শাকসবজি যেমন টমেটো, গাজর, ফুলকপি, সিম, এই ধরনের শাকসবজি গুলো সাধারণত দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা সম্ভব। আপনি এসব শাক সবজি গুলো দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করতে চাইলে অবশ্যই আপনাকে শাক সবজি গুলো সেদ্ধ করে পানি ঝরিয়ে নিতে হবে, এরপরেই আপনাকে এয়ার টাইপ বক্স অথবা জিপ্লক ব্যাগে ভরে ডিপ ফ্রিজে রেখে দিন। এভাবে রাখলে এই শাক সবজি গুলো আপনি এক মৌসুম থেকে আরেক মৌসুম পর্যন্ত খেতে পারবেন এবং আশাকরি দীর্ঘদিন সতেজ এবং টাটকা থাকবে যাতে আপনি খেতে পারেন এই শাক সবজি গুলো পরবর্তী মৌসুমে।

মসলা সংরক্ষণ করার উপায়

বাংলাদেশের গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রেহেনা বেগম বলেন, মসলা নষ্ট হওয়ার প্রধান কারণ হলো আদ্রতা। বিশেষ করে গুড়া মসলা আদ্রতার কারণে আরও দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। মসলা রাখতে হয় বয়ামে বা পটে। যাতে আপনার বয়ামে বাতাস প্রবেশ করতে না পারে। সবথেকে ভালো হয় যদি আপনি সংরক্ষণ করা মসলা গুলো ব্যায়ামে রাখার আগেই শুকিয়ে নেন রোদে। আপনি যদি সারা বছরের জন্য মসলাগুলো এক দিনেই গুঁড়ো করে রাখতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে রোদে ভালোভাবে শুকিয়ে সেটি ভালো করে গুরো করে বয়ামে ভরে বায়ুরোধী বাক্সে ভরে ডিপ ফ্রিজে রাখলে অনেক দিন ভালো থাকবে। তবে আপনার গুরু করা মসলাগুলো যদি আপনি বেশি দিন ফ্রিজে রাখেন তাহলে গন্ধ ছড়াবে, এজন্য আপনাকে গুঁড়ো করা মামলাগুলোর ফ্রিজে রাখার আগেই বাক্সের ভিতরে ঢোকার পরে উপরে লবণ ছিটিয়ে দিলেই বেশিদিন থাকবে এবং গন্ধ ছড়াবে না।

মিষ্টি কুমড়া সংরক্ষণ

মিষ্টি কুমড়া দিয়ে বডি বানিয়ে দীর্ঘদিন খাওয়া যায়। আপনি যদি মিষ্টি কুমড়ার সংরক্ষণ করতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই ভালোভাবে ধুয়ে সুন্দর ভাবে কেটে বড় বড় করে পিস করে সুন্দরভাবে নরমাল ফ্রিজে রাখতে হবে তাহলে আপনি দীর্ঘদিন মিষ্টিকুমড়া টি সংরক্ষণ করতে পারবেন। এবং আপনি অবশ্যই মনে রাখবেন যে মিষ্টি কুমড়ায় অধিক পারো পরিমাণের পুষ্টিসমৃদ্ধ রয়েছে। এছাড়াও আপনি চাল কুমড়া গাছ থেকে পেড়ে কুমড়ার বোটাটি ফেলে পর পর আইবো টাকাটা অবস্থায় বা কাটা অংশে চুন লাগিয়ে রাখলে কয়েক মাস সংরক্ষণ করা সম্ভব।

পরিশেষে

পরিশেষে আমরা আপনাদের সামনে একটি কথাই বলবো যদি আপনি টাটকা এবং সতেজ ফলমূল গুলো পেতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে বাজারে গিয়ে টাটকা এবং সত্যের শাকসবজি গুলো কিনতে হবে। আপনি যদি অধিক পরিমাণে কাঁচা এবং টাটকা শাক-সবজি গুলো কিনে ফেলেন তাহলে আপনাকে অবশ্যই সংরক্ষণ করতে হবে। আমরা আপনাদের সামনে কাঁচা এবং টাটকা শাকসবজি গুলো কিভাবে সংরক্ষণ করবেন তারা বিষয় নিয়ে সকল শাকসবজির একটি করে আর্টিকেল তৈরি করেছি যাতে আপনি সহজেই জানতে পারেন কোন ধরনের শাকসবজি গুলো কিভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। আপনি যদি আমাদের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে অবশ্যই আপনি সকল শাকসবজি গুলো সুন্দর ভাবে সতেজ এবং টাটকা রাখতে পারবেন এবং সংরক্ষণ করে অধিক দিন খেতে পারবেন। আমাদের আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনাদের প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করবেন এবং আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *